Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

দেশে শিশু মৃত্যু হার কমাবে ‍‍`স্ক্যানু‍‍`

মো. মাসুম বিল্লাহ

আগস্ট ১৩, ২০২২, ০৪:০৮ পিএম


দেশে শিশু মৃত্যু হার কমাবে ‍‍`স্ক্যানু‍‍`

দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫০টি জেলায় নবজাতকের সুরক্ষায় বিশেষায়িত স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ণ ইউনিট (স্ক্যানু) চালু করা হয়েছে, এমনকি এর মাধ্যমে শিশু মৃত্যুর হার অনেকাংশেই কমে আসবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে প্রতি হাজারে ৩০ জন শিশু মারা যায়। কিন্তু এসডিজি অর্জন করতে হলে এই হার কমিয়ে আনতে হবে। এক্ষেত্রে স্ক্যানু কার্যকর ভুমিকা রাখবে।

শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে শিশুদের স্পেশাল কেয়ার ইউনিট স্ক্যানু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আজকে স্ক্যানু উদ্বোধন করলাম। যারা আমাদেরকে স্ক্যানু দিয়েছে, তাদেরকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে ইউনিসেফ, ইউএসএইড, সেভ দ্যা চিল্ড্রেন আমাদেরকে সহায়তা করে যাচ্ছে। আমরা ৬৪ জেলার মধ্যে ৫০টিতে স্ক্যানু স্থাপনে সক্ষম হয়েছি। আশা করি খুব দ্রুতই বাকিগুলোতে স্থাপন হয় যাবে।

জাহিদ মালেক বলেন, দেশে একসময় শিশু মৃত্যুর হার হাজারে ১০০ কাছাকাছি ছিলো, এখন কমে ৩০ এসেছে। আমরা ১২তে নামিয়ে আনতে চাই। এসডিজি গোল অর্জনে আমাদেরকে মা ও শিশুমৃত্যু কমিয়ে আনতে হবে। এক্ষেত্রে স্ক্যানু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

তিনি বলেন, স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ণ ইউনিটটি মূলত আইসিইউর মতো কাজ করে। সেখানে শিশুদেন যেন সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া যায়, এটি আমরা নিশ্চিত করবো। একজন নবজাতক শিশু ওই সময়টাতে কথা বলতে পারে না। তারা নির্ভর করে অনেকটা মা আর পরিবেশের ওপর। এখন যেহেতু স্ক্যানু সিস্টেম থাকছে, সেখানে সবধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে, যে কারণে শিশু মৃত্যুর শঙ্কা কমে যায়।

নামকরণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, স্ক্যানুকে আমরা শিশু রাসেলের নামে উৎসর্গ করলাম। সারাদেশের প্রতিটি হাসপাতালেই রাসেলের নামে স্ক্যানুর নামকরণ করা হবে। এর মাধ্যমে শিশু রাসেলের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এরমধ্যে যেখানে যেই অনুমোদনের প্রয়োজন হয়, আসরা সেটি ব্যবস্থা করবো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, সরকারের এসডিজি অর্জনে এই স্ক্যানু কাজ করবে। তবে, এটা ঠিক যে যেকোন কিছু উদ্বোধন ও শুরু করা সহজ, কিন্তু সেটা ধরে রাখা কঠিন। আমরা চেষ্টা করবো স্ক্যানুটা যেন হারিয়ে না যায়, যন্ত্রপাতি যেন নষ্ট হয়ে না পড়ে থাকে।

তিনি বলেন, স্ক্যানু চালুর ফলে ঢাকামুখী রোগীদের ভিড় কমবে। কিন্তু কোন কারণে বন্ধ হয়ে গেলে আবারও চাপ বেড়ে যাবে। আমরা অধিদপ্তর থেকে চেষ্টা করবো যেন সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রমটি চলমান থাকে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সাবেক চেয়রাম্যান ও বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ বলেন, নবজাতকের সেবায় স্ক্যানু দারুণ ভূমিকা রাখবে। আমরা দেখি যে, দেশে প্রতি এক হাজার নবজাতকের মধ্যে ২৮ দিনের মধ্যে ১৮ শতাংশই মারা যায়। ১৮ শতাংশ ২ থেকে ৮ দিনের মধ্যে মারা যায়।

তিনি বলেন, ৫০টি হাসপাতালে স্ক্যানু চালু করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ১৪টি জেলায় নেই, দ্রুত আশা করছি বাকিগুলোতেও দ্রুত চালু হয়ে যাবে। স্ক্যানুর চেয়ে মাদার স্ক্যানুটাও জরুরি, শুধু স্ক্যানু নয়। মাতার স্ক্যানুতে মায়ের সাথে থাকবে শিশু। এতে শিশু সুরক্ষিত থাকবে, নার্স কম লাগবে, চিকিৎসক কম লাগবে।

তিনি আরও বলেন, চালুর চেয়ে মেইটেনেন্স জরুরি। স্বাস্থ্য অধিদফতর আরআরটি টিম প্রস্তুত করেছে। এটা যদি ঠিকমতো যদি কাজ করে তাহলেই এই স্ক্যানুগুলো চলবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরসহ আরও অনেকে।

ইএফ

Link copied!