ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মলীগের নামে প্রতারণা 

শরিফ শেখ, সাভার

শরিফ শেখ, সাভার

জুলাই ১৮, ২০২২, ০৬:৪৮ পিএম

জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মলীগের নামে প্রতারণা 

সাভারের আশুলিয়ায় স্ব-ঘোষিত "জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মলীগ" প্রতিষ্ঠা করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বেলাল চৌধুরী ওরফে বি. চৌধুরী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে গৃহনির্মাণকালে চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা বি. চৌধুরী "জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মলীগ" নামের একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি পরিচয়ে ওই এলাকায় নানা অপকর্ম করে চলেছেন। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি কমিটির একটি কাঠামো সাজিয়ে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ২০০০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে প্রমান রয়েছে। এছাড়া চাঁদাবাজিসহ না অপকর্ম করছেন অকপটে। 

বেলাল হোসেন চৌধুরী নোয়াখালী জেলার বাসিন্দা। তিনি তার পরিবারসহ আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নে বসবাস করছেন। 

চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার শিকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হলের নিরাপত্তা কর্মী কাঞ্চন বলেন, আমার ভাগনি জামাইকে তৃতীয় শ্রেণীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা নেয় বেলাল চৌধুরী। প্রথমে ২ লাখ টাকা ও নিয়োগ পত্র পাওয়ার পরে বাকি ৪ লাখ টাকা পরিশোধের কথা ছিল। পরে আমি ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকা তুলে দেই দুই লাখ টাকা। কিছু দিন অতিবাহিত হলে তিনি বলেন বাকি ৪ লাখ টাকাও আগেই পরিশোধ করতে হবে। এই ৪ লাখ টাকা না দিলে নিয়োগ হবে না বলে তিনি জানিয়ে দেন। পরে বাধ্য হয়ে আরও ৪ লাখ টাকা আমি তাকে দিয়ে দেই। এর পর থেকে বেলাল নানাভাবে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি টাকা ও চাকরি কিছুই দেন না। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে আমাকে ১ লাখ টাকা ও বাকি টাকার চেক প্রদান করেন। বাকি টাকা পরিশোধ করে চেক ফেরত নেবেন বলে সকলের সম্মুখে কথা দেন তিনি। কিন্তু টাকা পরিশোধ করে চেক ফেরত নেওয়ার তারিখ আসলে তিনি সব কিছু অস্বীকার করেন। এখন ওই টাকা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। আমি গরীব মানুষ, টাকাটা ঋণ করে দিয়েছি। বেলাল চৌধুরী আমার সাথে প্রতারণা করেছেন। আমি তার শাস্তি দাবি করছি। 

একই প্রতারণার শিকার অপর হলের নিরাপত্তা কর্মী মনির হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে তৃতীয় শ্রেণীর একটা চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০১৮ সালে টাকাটা নিয়েছে। তার নাম বিল্লাল হোসেন কিন্তু বি. চৌধুরী নামে পরিচয় দেন। ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছিল। গত দুই বছর ধরেই তিনি ১০ তারিখ ২০ তারিখ বলে সময় ক্ষেপন করছেন। কিন্তু চাকরি কিংবা টাকা কিছুই দিচ্ছেন না। ফোন দিলে ফোন ধরেন না, ধরা না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা করছেন। পরে স্থানীয়ভাবে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশি হয়। সেখানে ঈদুল ফিতরে আগে ২৬ রমজানে টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তিনি ১ লাখ টাকা দিয়ে আবার ঈদুল আযহার আগে বাকি টাকা দেওয়ার সময় নেন। ঈদুল আযহার আগে আর টাকাটা দেয় নি। পরে বাকি টাকাটা চাইতে গেলে বি. চৌধুরী নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেন। তিনি শেনওয়ালিয়া এলাকায় থাকেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মলীগ নামে একটা সংগঠন চালু করেছেন। এই সংগঠনের কোন ভিত্তি নেই তা পরে জানতে পেরেছি। আওয়ামী লীগের সেন্ট্রাল নেতা-নেতৃদের সাথে তার ভাল যোগাযোগ বলে তিনি এলাকায় প্রচার করেন। পরে প্রান্তীক গেটে ৪ লাখ, ১ লাখ করে দুই বার ও ৪০ হাজার তার হাতে তুলে দেই। সব টাকা ব্যাংক থেকে উঠিয়ে তাকে দিয়েছি। এছাড়া রেডিও কলোনীর রেবেকাসহ আরও অনেকেই তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

চাঁদার ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক সেনা সদস্য বলেন, আমি বি চৌধুরীর বড় ভাই কে চৌধুরীর ওরফে কামাল চৌধুরীর মাধ্যমে একটি জমি কিনে বাড়ি নির্মানের প্রস্তুতি নেই। বাড়ি নির্মানকালে বেলাল চৌধুরী আমার কাছে এসে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। 

তিনি বলেন, ১ লাখ টাকা পুলিশকে দিতে হবে আর ৫০ হাজার টাকা তারা খেয়ে ফেলবেন আমি বিষয়টি আমার ছেলেকে জানালে, আমার ছেলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে পুলিশি পাহারায় আমরা বাড়ির কাজ সম্পন্ন করি। পরবর্তীতে বি চৌধুরী তার দলবল নিয়ে আমার বাড়িতে এসে আমি ও আমার ছেলেসহ পরিবারের ওপর হামলা করে। পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসা হয়। পরে আমি অভিযোগ টি তুলে নেই। তারা খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক এবং সংঘবদ্ধ। প্রতারণা করে আমার কাছেও ৩০ হাজার টাকা নিয়েছে বি. চৌধুরী। এই বি. চৌধুরী তার বড় ভাই কে. চৌধুরীর ছত্রছায়ায় এসব করে বেড়ান। সব কিছুর মূল হোতা কে. চৌধুরী বলেও দাবি করেন তিনি। 

এছাড়া জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মলীগের কমিটি গঠনের কথা বলে ফরম প্রতি ২ হাজার টাকা আদায় করেছেন এই চৌধুরী। ফরম ক্রয় করা রাকিব ইসলাম ভুবন বলেন, "জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মলীগ" আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গসংগঠন এবং তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পরিচয় দিতেন বি. চৌধুরী। এই কমিটির সভাপতি পরিচয়ে তিনি আমাদের কমিটিতে আসার আহবান করেন। এসময় একটি ফরম দিয়ে আমাদের প্রলুব্ধ করেন এবং ২ হাজার করে টাকা আদায় করেন। খোঁজ নিয়ে শুনি এধরনের কোন সংগঠন আওয়ামী লীগে নেই। আমি প্রথমে ১০০০ টাকা দেই। পরে সাভার কলেজ ছাত্রলীগের ভাইদের কাছর বিষয়টি বললে তারা বলেন এধরনের কোন সংগঠন নেই। পরে বুঝলাম আমরা প্রতারণার স্বীকার হয়েছি। 

জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মলীগের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত বি. চৌধুরী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রজন্মলীগের কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য সকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি ভাত খাচ্ছি, খেয়ে ফোন দেবো। পরবর্তীতে তিনি আর ফোন দেননি এবং রিসিভও করেননি। 

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ ধরেনর অভিযোগ আগেও আমারা পেয়েছি। ঘর দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের ঘটনাও সেখানে আছে। এ ঘটনায় এক নারীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা হবে।

কেএস 

Link copied!